কোথায় যেন যাওয়ার জন্য দিপু রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে টোটোর অপেক্ষা করছিল। অপেক্ষার দুই-চার মিনিটের মধ্যে একটা ফাঁকা টোটো পেয়ে সোৎসাহে তাতে চেপে বসলো। ভাবলো গন্তব্যে পৌঁছানো মোটামুটি নিশ্চিত। পকেটে থেকে মোবাইল আর হেডফোন বার করে ভাবছিল গান শুনবে কিন্তু কিছু দূর যেতে যেতে না যেতেই দেখতে পেল একজন ভদ্রমহিলা আর একটা ছোট্ট বাচ্চা টোটোতে ওঠার জন্য অপেক্ষারত।
ইশারা বুঝে টোটো তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়াল। যে ছোট্ট বাচ্চা ছেলেটা ছিল ওখানে তার বয়স কতো হবে…ওই ছয় কিম্বা সাত বছর।প্রথম দেখাতেই খুব সহজে দিপু বুঝতে পেরেছিল খুব চঞ্চল বাচ্চাটা, কারণ সে টোটোর সামনে বসার জন্য খুব জেদ করছিল ওর মায়ের সাথে, এমনকি টোটো চালকের সাথেও। বাচ্চাটা বারবার বলছিল আমি সামনে বসে যাবো।
সামনে বসে গেলে হাওয়া লাগবে, আলো দেখবো, গাড়ী দেখবো, ভালো লাগবে, ইত্যাদি বলে তার মা কে বোঝাচ্ছিল। কিন্তু মায়ের মন… না ওকে একা ছাড়া যাবে না, শত জেদকে উপেক্ষা করে ভদ্রমহিলা বাচ্চাকে নিয়ে পিছনে বসলো। দিপু বাচ্চাটার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছিল বাবা!
কি জেদি বাচ্চা! এবং দিপু হঠাৎই ওর মাকে জিজ্ঞেস করল আচ্ছা আপনি ওকে সামনে বসতে দিলেন না কেন? তখন বাচ্চাটার মা দিপুকে যে উত্তর দিয়েছিল তার ফলে এক জলহীন কান্নায় দিপুর মন ভিজে গিয়েছিল। যে স্মৃতিতে দিপু আজও ভারাক্রান্ত হয়, দগ্ধ হয়। দিপু এক কালজয়ী উপলব্ধি হলো – আসলে দৃশ্যের আনন্দের থেকে অনুভূতি কিম্বা অনুভবের আনন্দের মান কোটি গুন বেশি।
কলমে ~ সোহান